রামগড়-সারুম সীমান্তে বারুণী স্নান উৎসব
স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ-ভারত দুই পাড়ে মানুষের মহামিলন মেলা হয়ে গেলো। ঐতিহ্যবাহী বারুণী স্নান উৎসবকে ঘিরে বাংলাদেশের রামগড় ও ভারতের সাবরুম সীমান্তের ফেনী নদীতে দুই দেশের পুণ্যার্থীদের সমাগম ঘটেছে। সীমান্ত পারাপার বন্ধ থাকায় বুধবার নদীর মাঝে ফিতা টেনে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী বিএসএফের সতর্ক অবস্থানের কারণে নিজ নিজ দেশের অংশে পূজা ও স্নান করে ফিরে গেছেন পুণ্যার্থীরা।
জানা যায়, ব্রিটিশ আমল থেকেই চৈত্রের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে প্রতি বছর ফেনী নদীতে বারুণী মেলায় মিলিত হন দুই দেশের হাজার হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ। পূর্ব পুরুষদের আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি নিজেদের পুণ্যলাভ ও সকল প্রকার পাপ, পঙ্কিলতা থেকে মুক্তি লাভের আশায় ফেনী নদীতে বারুণী স্নানে ছুটে আসেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া বারুণী স্নান বা পূজা অর্চনা ছাড়াও দুই দেশে অবস্থানকারী আত্মীয়স্বজনদের দেখার জন্য দূর দুরান্ত থেকে ছুটে আসেন অনেকেই। ঐতিহ্যবাহী বারুণী স্নান উৎসকে ঘিরে বহুকাল আগে থেকেই দুই দেশের সীমান্ত অঘোষিতভাবে কিছু সময়ের জন্য খোলা ছিল। তবে গত দুই বছরে করোনা মহামারির কারণে তা ভেস্তে গেলেও এ বছর সীমান্ত পারাপার বন্ধ রেখে নদীতে পূজা অর্চনা ও স্নান করার সুযোগ করে দেয় দুই দেশের সীমান্ত বাহিনী। বারুণী মেলা শুধু বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমিত নয় বরং ত্রিপুরা, মারমা, চাকমা, মুসলিমসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সমাগম ঘটে এ মেলায়।
করেরহাঁট থেকে আসা সীমা রাণী সরকার জানান, তার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন ভারতের ত্রিপুরায়। প্রতি বছর এ দিনটার অপেক্ষায় থাকেন ভারতে থাকা তার মেয়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে। করোনায় গত দুই বছর দেখা হয়নি। কিন্তু এ বছর অনেক আশা নিয়ে এসেও বিএসএফের বাঁধার মুখে মেয়ের সঙ্গে সরাসরি দেখা হয়নি। শুধু দূর থেকে মেয়েকে দেখেছেন।
রামগড় ৪৩ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল আনোয়ারুল মাজহার বলেন, ঐতিহ্যবাহী বারুণী স্নান উৎসব স্থানে নির্দিষ্ট অংশে পুণ্যার্থীদের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালনে কোন ধরনের বাধা না থাকলেও বিএসএফ ও বিজিবি সীমান্ত পারাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।