সেনাবাহিনীর উদ্যোগে মানিকছড়িতে দু’দিন ব্যাপি অমর একুশে গ্রন্থ মেলার উদ্বোধন
আব্দুল মান্নান: রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহর চট্টগ্রামে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও চলছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। এ মেলার স্বাদ নেওয়া তৃণমূলের শিক্ষার্থীদের সৌভাগ্যে জুটে না। তাই পার্বত্য খাগড়াছড়ির গুইমারা রিজিয়নের নিদের্শে মানিকছড়িতে দু’দিন ব্যাপি অমর একুশে গ্রন্থ মেলার আয়োজন করেছে সিন্দুকছড়ি জোনের সেনাবাহিনী।
২০ ফেব্রুয়ারী সকাল ১১টায় মানিকছড়ি উপজেলা টাউন হল চত্বরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অনুপ্রেরণায় অনুষ্ঠিত‘অমর একুশে গ্রন্থমেলায়’সমবেত হয় উপজেলার শতশত শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা। এ যেন শিশু-কিশোরদের অসাধ্য সাধন। একদিন আগেও এসব শিশু-কিশোররা স্বপ্নেও ভাবেনি তারা অমর একুশে গ্রন্থমেলা বা বই মেলা স্বচোখে দেখবে,কিংবা নিজ হাতে একটি বই কিনবে। এসএসসি পরীক্ষা চলমান থাকায় এমনিতে মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ তারপরও সেনাবাহিনীর উদ্যোগে বই মেলার খবর পেয়ে হাসিমুখে শতশত ছেলে-মেয়েরা সকাল হতেই সমবেত হয়েছে গ্রন্থমেলায়। সিন্দুকছড়ি সেনাবাহিনীর আয়োজনে এ গ্রন্থমেলায় চট্টগ্রাম ও ঢাকার ৮টি প্রকাশনী এ মেলায় স্টল সাজিয়েছে।
আর মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.কে.এম সাজেদুল ইসলাম,এ.এফ.ডাব্লিউ.সি,পিএসসি,জি। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিন্দুকছড়ি জোন অধিনায়ক লে.কর্ণেল রুবায়েত মাহমুদ হাসিব, মানিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ম্রাগ্য মারমা,গুইমারা উপজেলা চেয়ারম্যান উসাপ্রু মারমা, উপজেলা স্বান্থ্য প.প. কর্মকর্তা ডা. মো. নোমান মিয়া, মানিকছড়ি অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রশীদ,গুইমারা অফিসার ইনচার্জ বিদ্যুৎ কুমার বড়ুয়া, সিন্দুকছড়ি জোন উপ-অধিনায়ক মেজর মো. তৌহিদুল ইসলাম, মানিকছড়ি সাব জোন কমান্ডার লে. ওয়ালিউল্লাহ, সনাতন নেতা সজল বরণ সেন প্রমূখ। প্রধান অতিথি সকল অতিথিদের নিয়ে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন। পরে অতিথিরা স্টল পরিদর্শন শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং সর্বশেষ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।
এ সময় প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.কে.এম সাজেদুল ইসলাম,এ.এফ.ডাব্লিউ.সি,পিএসসি,জি বলেন,বই জ্ঞান ও জীবন গঠনের একমাত্র প্রতীক, জ্ঞান অর্জন ছাড়া পৃথিবীতে কেউই প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। নিজেকে জানার,শিক্ষার,গঠনের জন্য অবশ্যই বইয়ের আশ্রয় নিতে হবে। এ অঞ্চলের হত-দরিদ্র জনগোষ্ঠির শিশু-কিশোরেরা হয়তো শহরে গিয়ে বই মেলায় বিচরণ করা সম্ভব হয়ে উঠবেনা। এ বিষয়টি সেনাবাহিনীর নজরে এসেছে,তাই আজকের এ আয়োজন। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, নিজেকে জানতে হলে,গড়তে হলে বইয়ের বিকল্প নেই। সকলের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস বাড়াতে হবে, যে যত বেশি বই পড়বে,সে তত জ্ঞানী হবে। পৃথিবীতে বই পড়ে কেউই ক্ষতিগ্রন্থ হয়নি। দেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে গুণগত মানের পড়ালেখা ও মেধাবী শিক্ষার্থীর প্রয়োজন। পাহাড়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির উন্নয়নে সৃজনশীল কার্যক্রমে সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত।এ ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। আগামী কাল অমর একুশের বিকাল পর্যন্ত এ গ্রন্থমেলা চলবে।