গুইমারাতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইউপিডিএফ’র সংগঠক নিহত

স্টাফ রিপোর্টার: খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারায় প্রতিপক্ষের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ের আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফের গুইমারা শাখার সংগঠক অংথোই মারমা ওরফে আগুন (৫২) নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ২রা সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল আনুমানিক পোনে ১০টার দিকে উপজেলার দেওয়ান পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত অংথোই মারমা উপজেলার বুদং পাড়ার (যৌথ খামার) কংহ্লাউ মারমার ছেলে ও ওই এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ সংগঠনটির গুইমারা ইউনিটের দায়িত্বে ছিলেন এবং তিনি স্থানীয়দের কাছে গুইমারার ত্রাস হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

ইউপিডিএফের একটি সূত্র নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, সকালে ইউপিডিএফ সংগঠক অংথোই মারমা সাংগঠনিক কাজে যাচ্ছিলেন। এ সময় দেওয়ান পাড়া নামক স্থানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা প্রতিপক্ষ মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা তার ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। ঘটনার পর পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

গুইমারা থানার অফিসার্স ইনচার্জ আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল নিশ্চিত করছেন, লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে প্রেরণ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে ঘটনাটি কে বা কারা ঘটিয়েছেন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা সম্ভভ হয় নি। ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।

 সন্ত্রাসী কর্তৃক ইউপিডিএফ সংগঠককে হত্যার নিন্দা:

ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা এক বিবৃতিতে আজ শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ সকালে গুইমারায় সেনা মদদপুষ্ট নব্যমুখোশ সন্ত্রাসী কর্তৃক ইউপিডিএফের স্থানীয় সংগঠক অংথোই মারমা ওরফে আগুন (৫২)কে গুলি করে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, আজ সকাল ৯:৪৫টার দিকে অংথোই মারমা সাংগঠনিক কাজে যাবার পথে গুইমারার দেওয়ান পাড়া নামক স্থানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলার শিকার হন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। নিহত অংথোই মারমার পিতার নাম কংহ্লাউ মারমা। তাঁর বাড়ি উপজেলার যৌথখামারের বুদুংপাড়ায়।

বিবৃতিতে অংগ্য মারমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শাসকগোষ্ঠি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদ দিয়ে একের পর এক ইউপিডিএফ নেতা-কর্মীকে হত্যার কাজে লেলিয়ে দিচ্ছে। অংথোই মারমাকে হত্যার ঘটনাটিও তারই অংশ।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধে পক্ষে গণেজোয়ার সৃষ্টি হওয়ায় এ গণআন্দোলনকে ভেস্তে দিতে শাসকগোষ্ঠি ও তার বাহিনী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। যার কারণে তারা সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে খুন-খারাবি করে সংঘাত উস্কে দেয়ার মরিয়া অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি সবাইকে শাসকগোষ্ঠির এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

খুন, গুম, অপহরণ ও দমন-পীড়ন চালিয়ে ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমন করা যায় না উল্লেখ করে অংগ্য মারমা বলেন, ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছে। জনগণের ঐকান্তিক সমর্থন নিয়েই ইউপিডিএফ শত বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে আন্দোলন এগিয়ে নিচ্ছে। কাজেই, নেতা-কর্মী হত্যা করে, অন্যায় নিপীড়ন চালিয়ে ইউপিডিএফ’র ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন কখনো দমিয়ে রাখা যাবে না। বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে অংথোই মারমা (আগুন)-এর হত্যাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারপুর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সন্ত্রাসীদের সেনা মদদদান বন্ধ করার দাবি জানান।-নিরন চাকমা, প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।

Read Previous

রামগড়ে বিএনপি’র ৪৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

Read Next

গুইমারাতে প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউপিডিএফ কর্মী নিহত, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগ